প্রধানমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলের প্রধান—একই ব্যক্তি এই দুটি পদে একসঙ্গে থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি আজ অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো দল চাইলে জাতীয় সনদে “নোট অব ডিসেন্ট” (আপত্তি) দেওয়ার সুযোগ পাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ১৭তম দিনের সংলাপের শুরুতেই এ সিদ্ধান্তের কথা জানান কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পদে দলীয় প্রধান থাকা যাবে না—এ বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। কিছু দল ভিন্নমত জানিয়েছে। তারা চাইলে জাতীয় সনদে নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবে।”
বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং আমজনতার দল—এই দলগুলো মনে করে, একজন ব্যক্তি দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা থাকলে কোনো সমস্যা নেই। তাই তারা একাধিক পদে থাকার ওপর বিধিনিষেধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ অধিকাংশ দল মনে করে, একজন ব্যক্তির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা উচিত নয়। তারা একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকা বিরোধিতা করেছে।
এ প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, “কমিশনের পক্ষ থেকে একটি অনুরোধ রইল—যারা আপত্তি জানাতে চান, তারা চাইলে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। তবে আগের নিয়ম অনুযায়ী তারা জাতীয় সনদে নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা অনুসারে, নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকৃত। সেই অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত আপনাদের জানানো হলো।”
মঙ্গলবারের আলোচনার এজেন্ডায় ছিল—একই ব্যক্তির একাধিক পদে থাকা নিয়ে সিদ্ধান্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত প্রস্তাব তৈরি এবং নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা।
আলোচনার শুরুতে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।