গাজা উপত্যকায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রতিদিন না খেয়ে থাকছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (WFP)। সংস্থাটি জানায়, প্রায় ৯০ হাজার নারী ও শিশু বর্তমানে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছেন এবং তাদের দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন।
সম্প্রতি অপুষ্টিজনিত কারণে আরও নয়জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এর ফলে চলমান সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২২ জনে। এই তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
গাজায় ত্রাণ প্রবেশ সীমিত হওয়ায় সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। ইসরায়েল দাবি করছে, তারা ত্রাণ সরবরাহে কোনো বাধা দিচ্ছে না এবং এসব মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী করছে। তবে জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, বাস্তবে সহায়তা প্রবেশ কঠোরভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এক ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা শুক্রবার জানান, গাজায় আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা এই পদ্ধতিকে অকার্যকর হিসেবে বর্ণনা করেছে। স্থানীয় সংবাদসূত্র জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডান এ ধরনের ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে, যদিও জর্ডান জানিয়েছে তারা এখনো ইসরায়েলের কাছ থেকে অনুমতি পায়নি।
জাতিসংঘের দৃষ্টিতে, আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ মূল সমস্যার সমাধান নয়; বরং এটি স্থলপথে সহায়তা প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আড়াল করার একটি প্রচেষ্টা মাত্র।
মানবিক সংকট ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতি গাজায় সহায়তা প্রবেশের বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানায়, গাজার চলমান মানবিক বিপর্যয় এখনই থামাতে হবে এবং ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “আন্তর্জাতিক সমাজের নির্লিপ্ততা ও মানবিক মূল্যবোধের অভাব গভীরভাবে হতাশাজনক।” তিনি আরও জানান, ২৭ মে থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্য সংগ্রহের সময় ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।














