অন্য দল থেকে এসে এখন বিএনপিতে যারা অপকর্ম করছে তাদের ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন । সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডস্থ ফাইভ স্টার কনভেনশন হলে ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির “রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত” কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মশালা ও প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড আমার নিজের এলাকা। এটি একটি বিএনপির উর্বর ওয়ার্ড। মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু যখন ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচন করেন তখন ১৭, ১৮ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সমন্বয়কারী ছিলাম। সেই ওয়ার্ডগুলো মঞ্জু সাহেবকে লিড দিয়েছে ২০ হাজার ভোট। এ তিন ওয়ার্ডে ভোট আছে ১ লাখের অধিক। তাই এ তিন ওয়ার্ডে যদি লিড নেওয়া যায় তাহলে অন্য ওয়ার্ডে হারলেও সমস্যা নেই। সংসদীয় আসনে এভাবেই আব্দুল্লাহ আল নোমান ভাই এখানে জিতেছেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত চসিকে আমার সাথে দেখা করেছিলেন। কখনো উপহার আনেননি। কিন্তু এবার বিশাল এক উপঢৌকন (উপহার) নিয়ে এসেছেন এবং আমাকে বলেছেন আপনারা সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন, অগ্রিম অভিনন্দন। তাদের কাছে এ মেসেজ চলে গেছে। তাই আপনাদের এখন কাজ হচ্ছে, যারা অন্য দল থেকে এখন আমাদের দলে ভিড়ে যে অপকর্ম করছে তাদের ত্যাগ করা। তাদেরকে তো আমাদের দরকার নেই। আমরা এদের ছাড়া সবকিছু পারি এবং পেরেছিও। গত ১৬ বছর তো করেছি, তখন তো ছিল না। তাই তাদের বাদ দিয়ে আমাদের গড়তে হবে।
তিনি বলেন, যারা আমাদের সাপোর্ট করতেন কিন্তু সামনে আসতে ভয় পেতেন, তারা তো আমাদের সঙ্গে আছেন। তারা হয়তো মাঠে ময়দানে ছিলেন না, কিন্তু আন্তরিকভাবে, সার্বিকভাবে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। তারা হয়তো রাজপথে মিছিল করতে পারেননি, কিন্তু সাহস যুগিয়েছেন। তারা যেহেতু আমাদের সঙ্গে আছেন তারাই আমাদের সম্পদ। তারাই কিন্তু আমাদের ভোট দিবে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির ভোটাররা কিন্তু আওয়ামী লীগের ভোটারদের মতো মিছিল মিটিংয়ে সর্বাত্মক অংশ নেয় এ রকম না। বিএনপির মিছিল করবে এক গ্রুপ, আর অন্যদিকে ভোটাররা নীরবে ভোট দিবেন। এটা আপনারা সবাই জানেন। তাই আপনারা ওই লক্ষ্যে কাজ করেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ দফা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান থেকেই শুরু হয়েছে। তিনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন এবং এটা নিয়ে বিশাল পরিকল্পনা উপহার দিয়েছিলেন। পরে বেগম খালেদা জিয়া এবং এখন তারেক রহমান রাষ্টযন্ত্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা উপহার দিয়েছেন। এরমধ্যে কিন্তু সমাজ সংস্কার, নগর সংস্কার, ওয়ার্ড সংস্কার, থানা সংস্কার, জাতি সংস্কার এবং রাষ্ট্র সংস্কারসহ সব ধরনের সংস্কার রয়েছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নাজিমুর রহমান বলেন, দেশের জনগণ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন গণতন্ত্র, সুশাসন ও মৌলিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই জাতীয় নির্বাচনই হবে জনগণের প্রতিনিধি নির্ধারণের একমাত্র পথ। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই সংগঠনকে শক্তিশালী করে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে।
পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সেকান্দরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. এমরান উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রতিষ্টাকালিন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুন জামান, শওকত আজম খাজা।
এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সদস্য মো. মহসিন, মহানগর বিএনপি নেতা ওমর ফারুক, আমিন মাহমুদ, ইব্রাহিম বাচ্চু, অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম, ইসমাইল বাবুল, বিএনপি নেতা শেখ আলাউদ্দিন, আব্দুল কাদের, ফরিদুল হক লিটন, সাবেক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম ডিউক, মহিউদ্দিন মিজান, খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ ফারুক, ফোরকান চৌধুরী, এস এম পারভেজ প্রমূখ।